“আচ্ছা, মা, ঘাস সবুজ কেন?… আচ্ছা, পাখিরা কি করে উড়তে পারে?… স্যার, বাচ্চারা কোথা থেকে আসে?… আচ্ছা, বাবা, মাছ জলেই বা থাকে কেন? ”- এই প্রশ্নগুলো যে কোন শিশুর কাছ থেকে আপনার দিকে ছুটে আসতে পারে, এবং আসেও। প্রত্যেক শিশুই এই রকম একরাশ কৌতূহল নিয়েই জন্মায়। তাঁরা জানতে চায় তাঁদের কাছে অজানা এই তথ্যগুলোকে, এবং যাচাই করে নিতে চায় বাকীদের সাথে। এই অনিঃশেষ কৌতূহলই শিশুদের বেড়ে ওঠার ও নতুন করে এই বিশ্বকে দেখবার, জানবার ও চেনবার চাবিকাঠি। এই কৌতূহলের ওপর ভর করেই তাঁরা নতুন জিনিষ সম্পর্কে জানে, বোঝে, বড় হয়ে ওঠে।
বিদ্যালয়ের পড়াশুনা একটি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা মূলত পরীক্ষা নির্ভর। আর এই বর্তমান সময়ে শিক্ষা ও পরীক্ষার চাপে একজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর কাছে খুবই কম সময় পড়ে থাকে, আর তাঁর ফলে কৌতূহলী মনের ভেতর থাকা যে অনেক প্রশ্ন, তা পরেও প্রশ্ন হিসাবেই থেকে যায়। আর বাড়ীতে অভিভাবকদের কাছে সময় না থাকার ফলে কৌতূহল নিরসন হয়ে ওঠে না অনেক শিশুরই।
এর একমাত্র উপায় হচ্ছে, নিজে থেকে শেখা বা আত্মশিক্ষা।
আমাদের চৌদ্দচুলী গ্রামের বিদ্যাসাগর নার্সারি স্কুল, আপনার ছেলে বা মেয়ের নতুন কিছু জানার ইচ্ছার কথা মাথায় রেখেই ৪ সপ্তাহ-ব্যাপী একটি কর্মশালা বা ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে, যেখানে আপনার শিশুরা তাঁদের “নিজে থেকে শেখার” ইচ্ছেকে ব্যবহার করে জানবে তাঁদের অজানা প্রশ্নের উত্তর আর তাঁর সাথে সাথেই হয়ে উঠবে আত্মশিক্ষায় পারদর্শী।
সারা বিশ্বে প্রচলিত ও প্রমাণিত আত্মশিক্ষার বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা চেষ্টা করব, শিশুদের মধ্যেকার যে বিশেষ ক্ষমতা তাঁকে ফুটিয়ে তোলার ও তাঁদের কৌতূহল গুলোকে নিরসন করবার। আমরা শিশুদেরকে হাতেকলমে ও ইন্টারনেটের সহায়তায় জানাব এই বিশ্ব সম্পর্কে, তাঁদের মনের ভেতরে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর তারা কোন পদ্ধতিতে, কিভাবে খুঁজে নিতে পারবে তাঁর সহজ পাঠ হবে আমাদের এই কর্মশালা বা ওয়ার্কশপ। সে জানতে পারবে সূর্যরশ্মি ও তাঁর উপকারের কথা, তাঁর সাথে সাথেই সে জানবে কি করে সোলার-পাওয়ার খব কম খরচে বিদ্যুৎ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়াও সে জানবে আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা গাছ, গুল্ম ও তাঁদের ভেষজ ও ঔষধি-মূলক গুনাগুণ এবং এরকম আরও অনেক কিছু।
এই কর্মশালাটি ফিউচার আর্টস ও লার্নিং-এর একটি কর্মশালা, যা রিংলিং কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ডিজাইন, ফ্লোরিডা, আমেরিকা-য় পাঠরত রোহিণী মাইতির ভাবনা। এই ফ্রী-ওয়ার্কশপটি রোহিণী মাইতি, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের এবং আমাদের গ্রামের শিক্ষকদের সহায়তায় আগামী ১৮ই জুলাই শুরু হতে চলেছে।